৩০ সদস্যের জাতীয় সমন্বয় পর্ষদ গঠনের মাধ্যমে রাষ্ট্রচিন্তার নব-পর্যায়ের যাত্রা শুরু
আজ ০৬ আগস্ট ২০২১, শুক্রবার সকাল ১১টায় এক প্রতিনিধি সভার মাধ্যমে রাষ্ট্রচিন্তার বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যদের উপস্থিতিতে একটি সমন্বয় পর্ষদ গঠন করার মধ্য দিয়ে ঔপনিবেশিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধে গণক্ষমতাতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি নির্মাণে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক, গবেষণাধর্মী ও চিন্তাগত উদ্যোগ হিসেবে রাষ্ট্রচিন্তা নব পর্যায়ের যাত্রা শুরু করেছে।
সেখানে উপস্থিত সকল সদস্যের সম্মতিতে রাষ্ট্রচিন্তার নতুন প্রস্তাবনা, কর্মসূচি ও গঠনতন্ত্র গৃহীত হয়েছে। অনুষ্ঠিত সভাতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন আইনজীবী হাসনাত কাইয়ূম। এরপর প্রস্তাবনা, কর্মসূচি ও গঠনতন্ত্রের খসড়া পাঠ করা হয়, এবং সকলের মতামত ও সম্মতির ভিত্তিতে তা গৃহীত হয়।
প্রস্তাবনায় বলা হয়, ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ রাষ্ট্রনৈতিক চিন্তা ও গণ(ক্ষমতা)তান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি নির্মাণের একটি উদ্যোগ হিসাবে কাজ করবে। রাষ্ট্রচিন্তা কোন রাজনৈতিক দল নয়, ‘রাজনৈতিক দল’ হয়ে ওঠার আপাতত কোন আকাঙ্ক্ষাও নেই তার। রাষ্ট্রচিন্তা হলো একটা রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরির পাটাতন মাত্র। বাংলাদেশকে ফিরে পাওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের নাগরিকদের রাজনৈতিক চিন্তা পুনর্গঠনের একটা সর্বাত্মক গণপ্রচেষ্টার নাম রাষ্ট্রচিন্তা।
রাষ্ট্রচিন্তা মনে করে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কারের গোড়ার কাজটি হলো শাসনতান্ত্রিক বা সাংবিধানিক, আইনগত এবং কাঠামোগত। এক ব্যক্তি এবং তার বাছাইকৃত গুটিকয়েক ব্যক্তির শাসন থেকে দেশকে জনগণের সার্বভৌমত্বে নিতে হলে এখানকার রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার লাগবে। এই সংস্কারের মূল লক্ষ্য হবে রাষ্ট্রক্ষমতার মালিকানা জনগণের হাতে নিয়ে নেওয়া। বাস্তবে কেবল নতুন কোন রাজনৈতিক দল নয়- নতুন রাজনৈতিক চিন্তা, বাংলাদেশকে নির্মাণের নতুন রাজনীতি, স্বাধীন দেশের নাগরিকের মর্যাদাদানে উপযুক্ত হিসেবে এই রাষ্ট্রকে পুনর্গঠনের রাজনীতিই জনতার প্রত্যাশা মেটাতে পারে এ মুহূর্তে। এ ধরনের প্রত্যাশা যে বুদ্ধিবৃত্তিক দায়িত্ব ও তৎপরতার চাহিদা সামনে আনে রাষ্ট্রচিন্তা ঠিক সেসবই করতে চায়।
রাষ্ট্রচিন্তা মনে করে, বাংলাদেশে বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের একটা দিক যেমন হবে পর্যালোচনামূলক- আরেকটা দিক হতে হবে গঠনমূলক। এখানে জনগণ কীভাবে অপরের হাতে নিজেকে বন্দি হতে দিচ্ছে সেটা যেমন দেখানো জরুরি- তেমনি কীভাবে মানুষ তার নিজের এবং সমাজের ওপর আপন অধিকার ও নিয়ন্ত্রণ পেতে পারে সে বিষয়ে আলাপ হাজির করাও কর্তব্য। এরকম কাজ হতে হবে অবশ্যই গণ-অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ায়। যে প্রক্রিয়া হবে বুদ্ধিবৃত্তিক, স্বেচ্ছামূলক এবং কর্তৃত্ববিরোধী।
নতুন গঠিত রাষ্ট্রচিন্তা সমন্বয় পর্ষদের সদস্যরা হচ্ছেন: [এই তালিকার বাইরে আরো কয়েকজন ব্যক্তি যুক্ত হয়েছেন বা হবেন।]
ড. হারুন উর রশিদ, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; হাবিবুর রহমান, সম্পাদক, রাষ্ট্রচিন্তা জার্নাল; আর রাজী, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; ড. আমিরুল ইসলাম কণক, শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়; ড. মো. মাহবুব হোসেইন, শিক্ষক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়; নাসির আহমেদ, শিক্ষক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়; নাহিদুল ইসলাম, শিক্ষক, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়; ফাইজ তাইয়েব আহমেদ, লেখক ও উন্নয়ন বিষয়ক গবেষক; মাইদুল ইসলাম, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; রোজিনা বেগম, গবেষক; মাযহার জীবন, সম্পাদক, উঠান; মোয়াজ্জেম আজিম, কথাসাহিত্যিক; জাহিদ সবুজ, শিক্ষক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়; লোকমান বিন নুর, শিক্ষক, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়; সেলিম খান, সাংবাদিক; শান্তনু হাসান, সাংস্কৃতিক এক্টিভিস্ট; ইমদাদুল এইচ খান, শিক্ষক, নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়; সায়েমা আলম, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; সুবর্ণা মজুমদার, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; নাহিদ হাসান লেখক ও গবেষক; চারু হক, লেখক ও গবেষক; সহুল আহমদ, লেখক ও গবেষক।